বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেছেন, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতায় দেশে আজ ঘুষ, দুর্নীতি, জোর-জুলুমের অবাধ্য রাজত্ব চলছে। মানুষের জান, মাল, ঈমানের নিরাপত্তা নেই। দেশে নতুন নামে পুরনো দিনের ব্যর্থ বাকশালী শাসন চলছে। কুখ্যাত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়ে সরকার একাধারে আল্লাহর হক ও আল্লাহর বান্দা জনগণের হক গুম করেছে। জনগনের ভোটারাধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরাই এখন বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে কবর দিচ্ছে।
![]() |
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরী কতৃক আয়োজিত কর্মশালা |
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর নবাবপুরস্থ দলের মহানগর কার্যালয়ে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আলহাজ্ব আব্দুল মালেক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ্ব মো: আজম খান, মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা হাফেজ আবু তাহের মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ বাশার, মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, মাষ্টার আব্দুল মান্নান ঢালী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুফতী মামুনুর রশিদ, মুফতী নাঈম আহমাদ, আলী মাকসুদ খান মামুন ও মুফতী কামাল উদ্দিন আশরাফ প্রমূখ।
মাওলানা হামিদী বলেন, দেশবাসীর ঈমান-আমলের হেফাজত ও সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুশাসনের সুপারমডেল খোলাফায়ে রাশেদার অনুসৃত নীতিতে দেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা তথা খেলাফত পদ্ধতির সরকার কায়েমের বিকল্প নেই। আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে খেলাফত প্রাপ্তির পূর্ব শর্ত হচ্ছে, মুসলমানদের ঈমানী শক্তি অর্জন এবং আমলে সালেহ অর্থাৎ নেক আদর্শ নেতৃত্ব ও ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করা। এ জন্যেই হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. মুসলমানদেরকে এক ও নেক হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করতেন। নেক না হয়ে শুধু এক হলে দুনিয়ায় ফেতনা বাড়বে বৈ কমবে না। মুসলমানদেরকে ভালো দিয়ে মন্দের মোকাবিলা করতে হবে। মাওলানা হামিদী বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের আইন করে সংবিধানে মৌলিক ভিত্তি বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে কেরে নেয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা না থাকলে দেশে ইনসাফ, ন্যায় বিচার ও সুশাসন থাকবে না। সম্প্রচার নীতিমালা তৈরি করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সংকোচিত করেছে।
তিনি দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদককে হয়রানী বন্ধ ও বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবি ও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি এবং আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামী টিভি খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, যে দেশে আইন করে বিচারপতিদের স্বাধীনতা কেরে নেয়া হয়, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়, সত্য প্রকাশ করার অপরাধে সাংবাদিকদের গ্রেফতার হয়রানি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদেরকে কথা বলার অধিকার কেরে নেয়া হয় সে দেশে গণতন্ত্র থাকে না।
বক্তারা বলেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন না থাকাই সবচাইতে জুলুম। এই জুলুমের দ্বারা শুধু আল্লাহর হকেই নষ্ট হচ্ছে না, আল্লাহর বান্দা জনগণের হকও ব্যাপকভাবে নষ্ট হচ্ছে। কেননা, আল্লাহর আইনই হচ্ছে একমাত্র বৈষম্য মুক্ত, নির্ভুল ও প্রকৃত নিরপক্ষ। আল্লাহ পাকের প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনা যেমন সকলের জন্য নিরপক্ষ ও সম উপকারী তদ্রুপ আল্লাহর আইনও সকলের জন্য নিরপেক্ষ ও সম উপকারী। আল্লাহর আইন ও রাসূল সা. এর আদর্শ ভিত্তিক ইসলামী হুকুমতের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, জনগণকে হাতে ধরে জান্নাতে পৌঁছে দেয়া আর মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্রের রাজনীতির বাস্তবতা হচ্ছে, মানুষকে অধর্মে উদ্বুদ্ধ করে খুশি মনে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া।